Summary
ল্যামার্কিজম ও এর সূত্রাবলী
ডডসন ১৯০৬ সালে ল্যামার্কিজমকে ৪টি সূত্রে ব্যাখ্যা করেন:
- প্রথম সূত্র - বৃদ্ধি: প্রতিটি জীবিত প্রাণী তাদের জীবনের মধ্যে দেহের আকার ও অঙ্গ-প্রতঙ্গের বৃদ্ধি ঘটাতে চায়।
- দ্বিতীয় সূত্র - পরিবেশের প্রভাব: অভিযোজনের জন্য উত্পত্তি হওয়া অভাবের কারণে দেহের আঙ্গিক পরিবর্তন ঘটে।
- তৃতীয় সূ্ত্র - ব্যবহার ও অব্যবহার: ব্যবহৃত অঙ্গ সুগঠিত ও কার্যক্ষম হয়, কিন্তু অব্যবহৃত অঙ্গ ক্ষুদ্র হয়ে বিলুপ্ত হয়।
- চতুর্থ সূত্র - অর্জিত বৈশিষ্ট্যের উত্তরাধিকার: জীবদ্দশায় অর্জিত বৈশিষ্ট্য ভবিষ্যৎ বংশধরদের মধ্যে সঞ্চারিত হয়।
ল্যামার্কিজমের সমালোচনা:
ল্যামার্কের ধারণা সমকালীন অনেকের দ্বারা স্বীকৃত হলেও, এটি বিজ্ঞানীমহলে অনেক কারণে সমর্থনযোগ্য হয়নি। প্রধানত:
- ব্যবহার ও অব্যবহারের ধারণা সত্য নয়; উদাহরণস্বরূপ, উন্নত হওয়া অঙ্গের আকার পরিবর্তন হয় না।
- অর্জিত গুণের বংশানুক্রম সমর্থনযোগ্য নয়; যেমন লেজ কাটা কুকুরের বাচ্চা লেজবিহীন জন্মায় না।
- অভাব বোধের কারণে অঙ্গ সৃষ্টি হওয়ার ধারণা সমর্থনযোগ্য নয়, যেমন মানুষের মনে পাখির ডানার অভাব বোধে ডানা ওঠার সম্ভাবনা নেই।
ল্যামার্কিজম (ল্যামার্কের)- এর সূত্রসমূহ
ডডসন ১৯০৬০ খ্রিস্টাব্দে বিবর্তন সম্বন্ধে-এর বিস্তৃত ধারণাকে ৪টি সূত্রের অদীন করে ব্যাখ্যার সুবিধা করে দেন।
ক. প্রথম সূত্র-বৃদ্ধি: প্রত্যেক জীব তার জীবনকালে অন্তঃজীবনী শক্তির প্রভাবে দেহের আকার এবং অঙ্গ-প্রতঙ্গের বৃদ্ধি ঘটাতে চায়।
খ.দ্বিতীয় সূত্র- পরিবেশের প্রভাব এবং জীবের সক্রিয় প্রচেষ্টা ও আঙ্গিক পরিবর্তন: সদা পরিবর্তনশীল পরিবেশে অভিযোজনের জন্য সৃষ্ট অভাবরোধের উদ্দীপনা এবং নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলে দেহের আঙ্গিক পরিবর্তন ঘটে।
গ. তৃতীয় সুত্র- ব্যবহার ও অব্যবহার : ক্রমাগত ব্যবহারের ফলে দেহের একটি বিশেষ অঙ্গ সুগঠিত, কার্যক্ষম ও বড় হতে পারে, আবার অব্যবহার অঙ্গটি ক্রমশ ক্ষুদ্র হয়ে বিলুপ্ত হয়ে যায়।
ঘ. চতুর্থ সূত্র- অর্জিত বৈশিষ্ট্যের উত্তরাধিকার : প্রতিটি জীবরে জীবদ্দশায় অর্জিত সকল বৈশিষ্ট ভবিষ্যৎ বংশধরে সঞ্চারিত হয়।
ল্যামার্কিজমের সমালোচনা
ল্যামার্কের সমকালীন অনেকের সাময়িক স্বীকৃতি পেলেও এ মতবাদ বিজ্ঞানীমহলে অনেক কারণে সমর্থনযোগ্য হয়নি, যেমন ঃ ল্যামার্কের ব্যবহার ও অব্যবহার তত্ত্বটি সত্য নয়; কারণ, শিরা ও ধমনী ক্রমাগত ব্যবহৃত হলেও এদের আকার ও আয়তন কখনো বুদ্ধি পায় না; বারংবার ব্যবহারের ফলে কোন অঙ্গের বৃদ্ধি হয়ত হতে পারে। কিন্তু ক্রমাগত ব্যবহারের ফলে কোন অঙ্গের নিষ্ক্রেয়তা কিংবা অবলুপ্তির ঘটনাও বিরল নয়; অর্জিত গুণের বংশানুক্রম সমর্থনযোগ্য নয়। লেজ কাটা কুকুরের বাচ্চা জন্মসূত্রে কখনই লেজবিহীন হয় না; অভাব বোধ ও প্রয়োজনের তাগিদে অঙ্গ সৃষ্টির ধারণা সমর্থনযোগ্য নয়। আকাশে উড়বার আকা খায় কোন মানুষের মনে পাখির মত ডানার জন্য অভাব বোধ মানুষের দেহে কখনো ডানা গজাবে না; ইন্দ্রিয় সৃষ্টির পূর্বে কোন ইন্দ্রিয়ের জন্য অভাব অনুভূত হওয়ার কথা কল্পনাও করা যায় না; ল্যামার্ক ধারণা করতেন ক্রিয়ার ফলেই কৌন অঙ্গের সৃষ্টি হয়। কিন্তু অঙ্গ না থাকলে তাঁর ক্রিয়ার প্রশ্ন অবান্তর।
# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন
Read more
